1. onemediabd@gmail.com : admin2 :
  2. info@www.dhanershis.net : ধানের শীষ :
বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের মনোনয়ন ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা - ধানের শীষ
বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫, ০১:৩০ অপরাহ্ন

বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের মনোনয়ন ও তারেক রহমানের রাজনৈতিক দূরদর্শিতা

মোহাম্মদ এহছানুল হক ভূঁইয়া
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৬ নভেম্বর, ২০২৫
  • ৩৫ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ এহছানুল হক ভূঁইয়া

বাংলাদেশের রাজনীতি এক নতুন বাঁকে দাঁড়িয়ে আছে। একদিকে নির্বাচনকেন্দ্রিক উত্তাপ, অন্যদিকে দলগুলোর অভ্যন্তরীণ পুনর্গঠন ও নেতৃত্বের পুনর্বিন্যাস—সব মিলিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন আজ এক নতুন বিন্যাসে প্রবেশ করছে। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি সম্প্রতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে—বীর মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক ছাত্রনেতা ও বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানকে মনোনয়ন দেওয়া—তা কেবল একটি নির্বাচনী পদক্ষেপ নয়, বরং একটি নীতি-নির্ধারণী বার্তা।

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের রাজনৈতিক বক্তব্য, যেখানে তিনি আগামী দিনের গণতন্ত্র, নির্বাচনী সংস্কার ও দলীয় ঐক্যের যে দিকনির্দেশনা দিয়েছেন, তা একযোগে বিএনপির নতুন রাজনৈতিক কৌশলের রূপরেখা নির্ধারণ করছে।

ফজলুর রহমান: মুক্তিযোদ্ধা চেতনা ও নেতৃত্বের ধারাবাহিকতা
অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান বাংলাদেশের ছাত্র রাজনীতি ও মুক্তিযুদ্ধ—দুই ধারারই পরীক্ষিত সৈনিক। বঙ্গবন্ধু-পরবর্তী রাজনৈতিক আন্দোলনে ছাত্রনেতা হিসেবে তিনি যে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছিলেন, তা পরবর্তীকালে বিএনপির সাংগঠনিক রাজনীতিতে তাকে দৃঢ় অবস্থান এনে দেয়।

স্বাধীনতা যুদ্ধের অংশগ্রহণ তাকে শুধু রাজনৈতিক বৈধতা দেয়নি, বরং এক ধরনের নৈতিক উচ্চতা দিয়েছে—যা বর্তমান প্রজন্মের ভোটারদের মধ্যেও গভীর প্রভাব রাখে। বিএনপি তার মতো প্রবীণ ও মুক্তিযোদ্ধা নেতৃত্বকে সামনে এনে দলের প্রতি জনবিশ্বাস পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে।

এই মনোনয়ন আসলে একটি “নীতিগত বার্তা”—বিএনপি শুধু আন্দোলন নয়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও আইনের শাসনের ধারাবাহিকতাকেও রাজনৈতিক মূলধারা হিসেবে ধারণ করতে চায়।

তারেক রহমানের নেতৃত্ব: কৌশল, প্রজ্ঞা ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে দেশের রাজনৈতিক কৌশল প্রণয়ন ও দল পুনর্গঠনের কেন্দ্রে অবস্থান করছেন। লন্ডন থেকে পরিচালিত তার নেতৃত্বকে কেউ কেউ দূরবর্তী ভাবলেও, তার বার্তাগুলো স্পষ্টভাবে একটি বাস্তববাদী রাজনৈতিক দর্শনের প্রতিফলন।

তিনি যে তিনটি মূল বিষয়ের ওপর জোর দিচ্ছেন তা হলো:
১. দলীয় ঐক্য ও শৃঙ্খলা রক্ষা
২. যুব ও তরুণ নেতৃত্বের অন্তর্ভুক্তি
৩, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিশ্চিতকরণ

এই নীতিগুলো বিএনপিকে একটি “বহুমাত্রিক দল” হিসেবে গড়ে তোলার প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা যেতে পারে—যেখানে অভিজ্ঞতা, আদর্শ, ও নবীন শক্তি একসঙ্গে কাজ করবে।

তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে “রিফর্মিস্ট” ধারা স্পষ্ট হচ্ছে, তা মূলত দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের আধুনিকীকরণ ও সাংগঠনিক জবাবদিহিতার ওপর নির্ভরশীল। এটি কেবল নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয় নয়, বরং দীর্ঘমেয়াদি রাজনৈতিক সংস্কারের সূচনা বলেও অনেকে মনে করছেন।

মনোনয়ন ও কৌশলের পারস্পরিক সম্পর্ক
ফজলুর রহমানের মনোনয়ন এবং তারেক রহমানের কৌশলগত দিকনির্দেশনা—এই দুই বিষয় পরস্পর পরিপূরক। একদিকে মুক্তিযুদ্ধ ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন, অন্যদিকে আধুনিক কৌশল ও নেতৃত্বের নবায়ন—এই দুই দিকের সমন্বয়ই বিএনপিকে এক নতুন রাজনৈতিক গতিতে নিয়ে যেতে পারে।

এই সমন্বয়কে “ট্রানজিশনাল পলিটিক্যাল সিনারিও” হিসেবে দেখা যায়—যেখানে দলটি অতীতের ঐতিহ্য এবং ভবিষ্যতের সম্ভাবনা—উভয়কেই সঙ্গে নিয়ে পথচলা শুরু করেছে।

নীতি-নির্ধারণী বিশ্লেষণ

১. দলীয় ঐক্য পুনর্গঠন:
বিএনপির দীর্ঘ আন্দোলন ও দমননীতির ইতিহাসে অনেক বিভাজন তৈরি হয়েছে। বর্ষিয়ান জননেতা ফজলুর রহমানের মতো ঐতিহ্যবাহী নেতৃত্বকে সামনে আনা দলের অভ্যন্তরীণ ঐক্য পুনর্গঠনের অংশ।

২. নতুন প্রজন্মের সম্পৃক্ততা:
তারেক রহমানের ঘোষিত কৌশলে তরুণ নেতৃত্বের অংশগ্রহণ একটি মূল উপাদান। এটি শুধু প্রজন্মের পালাবদল নয়, বরং রাজনৈতিক ধারাবাহিকতারও নিশ্চয়তা।

৩. মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদ—এক সেতুবন্ধন:
বিএনপি বহু বছর ধরে “জাতীয়তাবাদ বনাম মুক্তিযুদ্ধ” বিতর্কে আচ্ছন্ন ছিল। জননেতা ফজলুর রহমানের মনোনয়ন সেই বিভাজন ভাঙার কৌশল হিসেবেও দেখা যেতে পারে।

৪. আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা ও রাজনৈতিক বার্তা:
বিএনপি যদি মুক্তিযোদ্ধা ও অভিজ্ঞ নেতৃত্বকে সামনে রেখে রাজনৈতিক লাইনআপ তৈরি করে, তবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দলটির গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে—বিশেষত ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাতিসংঘের গণতান্ত্রিক অংশীদার দেশগুলোর কাছে।

৫. নির্বাচনী বার্তা ও জনআস্থা:
বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় জনগণের ভোটাধিকারে আস্থা ফেরাতে হলে দলকে বাস্তববাদী, স্বচ্ছ ও বিশ্বাসযোগ্য প্রার্থীদের সামনে আনতে হবে—যার প্রতিফলন ফজলুর রহমানের মনোনয়নেই স্পষ্ট।
রাজনৈতিক বাস্তবতা ও ভবিষ্যতের চ্যালেঞ্জ
তবে রাজনৈতিক বাস্তবতা কঠিন। নির্বাচনী কমিশনের নিরপেক্ষতা, প্রশাসনের ভূমিকা ও রাষ্ট্রযন্ত্রের ব্যবহারের প্রশ্নে বিএনপিকে এখনও গভীর কৌশল অবলম্বন করতে হবে।
তারেক রহমানের নেতৃত্বে দলকে দুইটি দিক সামলাতে হবে—
একদিকে অভ্যন্তরীণ সাংগঠনিক শৃঙ্খলা;
অন্যদিকে বহির্বিশ্বে গ্রহণযোগ্যতা ও গণআস্থার পুনর্গঠন।
এই দুইটি দিকই যদি ভারসাম্যপূর্ণভাবে রক্ষা করা যায়, তাহলে বিএনপি পুনরায় গণতন্ত্রের অন্যতম কেন্দ্রীয় শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারবে।

শেষ কথা:
বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমানের মনোনয়ন কেবল একটি প্রার্থীপদ নয়, বরং এটি এক রাজনৈতিক দর্শনের প্রতীক—যেখানে স্বাধীনতা সংগ্রামের চেতনা, জাতীয়তাবাদী মূল্যবোধ এবং গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ একত্রিত হয়েছে।
তারেক রহমানের দূরদর্শী নেতৃত্ব এই দর্শনকে বাস্তবায়নের কৌশল তৈরি করছে। এই কৌশল সফল হলে বিএনপি শুধুমাত্র একটি বিরোধী দল নয়, বরং এক নবগঠিত গণতান্ত্রিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে—যার উদ্দেশ্য হবে “ক্ষমতা নয়, গণআস্থা পুনর্গঠন।”

সারসংক্ষেপ:
ফজলুর রহমানের মনোনয়ন মুক্তিযুদ্ধ ও জাতীয়তাবাদের সেতুবন্ধন।
তারেক রহমানের কৌশল আধুনিক নেতৃত্ব ও গণতন্ত্র পুনর্গঠনের নীলনকশা।
বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ভর করবে এই দুই ধারার ভারসাম্য রক্ষার ওপর।

— মোহাম্মদ এহছানুল হক ভূঁইয়া
প্রধান সম্পাদক, ধানের শীষ ডট নেট
www.dhanershis.net

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট