1. onemediabd@gmail.com : admin2 :
  2. info@www.dhanershis.net : ধানের শীষ :
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও মধ্যপন্থা রাজনীতির ভবিষ্যৎ - ধানের শীষ
সোমবার, ২৭ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
দেশের সব ক্রান্তিকালে জিয়া পরিবার হাল ধরেছে : আমান বাংলাদেশে নতুন মার্কিন রাষ্ট্রদূতের যোগদান এবং আগামীর বাংলাদেশ ভাবনা গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ: ফখরুল ২৩ নভেম্বর ফিরছেন তারেক রহমান দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এখন নির্বাচিত সরকার প্রয়োজন : ফখরুল তারেক রহমানের পক্ষ থেকে দাবাড়ু নীরকে আর্থিক সহায়তা ধানের শীষের জোয়ার কেউ আটকাতে পারবে না : নবীউল্লাহ নবী শাপলা না দেওয়ার আইনি ব্যাখ্যা দিলে অন্য প্রতীক বিবেচনা করা হবে: নাহিদ বিএনপির তিনশ আসনে একক প্রার্থী; কৌশলগত কারণে পরিবর্তন আসতে পারে ৫০ আসনে তত্ত্বাবধায়কের ভূমিকায় যেতে হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে : মির্জা ফখরুল

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও মধ্যপন্থা রাজনীতির ভবিষ্যৎ

মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৪ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৫৭ বার পড়া হয়েছে

====================
মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া

====================

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ একবিংশ শতাব্দীর জটিল প্রেক্ষাপটে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনার মুখোমুখি। মধ্যপন্থা এবং বর্তমান বাস্তবতার আলোকে এর মূল দিকগুলো বিশ্লেষণ করা যায়। বেশ কিছুদিন ধরেই গণমাধ্যমে এবং রাজনৈতিক বোদ্ধারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক অবস্থান নিয়ে বহুমুখী চর্চা চলছে। আজকে আমার লেখায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মধ্যপন্থা রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোকপাত করার চেষ্টা করব।

চ্যালেঞ্জসমূহ:
মেরুকরণ ও রাজনৈতিক দমন:
দেশের তীব্র মেরুকৃত রাজনৈতিক পরিবেশে বিএনপির কার্যক্রম প্রায়ই বাধাগ্রস্ত হয়। সরকারের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন, নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ দলের সংগঠনকে দুর্বল করেছে।
নেতৃত্বের সঙ্কট:খালেদা জিয়ার কারাবন্দী অবস্থা ও তার স্বাস্থ্যঝুঁকি, এবং তরুণ নেতৃত্বের অভাব দলের ভিতরে শূন্যতা তৈরি করেছে। ট্রেডিশনাল নেতৃত্বের উপর নির্ভরতা তরুণ প্রজন্মের কাছে দলের আবেদন কমিয়ে দিচ্ছে।
কৌশলগত দুর্বলতা:সরকারবিরোধী আন্দোলনে ব্যর্থতা (যেমন: ২০২২-২৩ সালের গণঅসন্তোষ), নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ও সহিংসতার ইতিহাস দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। অনেক সমর্থক “অকার্যকর আন্দোলন” নীতিতে হতাশ।
মধ্যপন্থা বনাম চরমপন্থা: দলটি মধ্যপন্থী অবস্থান নিলেও, অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির সুযোগ সীমিত। সরকারের সাথে সংলাপের অভাব এবং রেডিক্যাল গ্রুপগুলোর সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ মধ্যপন্থী পরিচয়কে ক্ষুণ্ণ করে।

সুযোগ ও সম্ভাবনা:
সরকারের ব্যর্থতার প্রতিক্রিয়া: অর্থনৈতিক সংকট (মুদ্রাস্ফীতি, রিজার্ভ সংকট), দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিরুদ্ধে জনঅসন্তোষ বাড়ছে। বিএনপি যদি এই অসন্তোষকে সংগঠিত করতে পারে, তাহলে জনসমর্থন ফিরে পেতে পারে। ৫ ই আগস্ট এর রেজিম পরিবর্তনের পর এই প্রত্যাশা আরও ব্যাপকভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতার রাজনীতি ও সাংগঠনিক ভিত্তি প্রতিস্থাপন করতে করতে।
তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা: ডিজিটাল প্রজন্ম (যারা বঙ্গবন্ধু-জিয়া যুগ দেখেনি) নতুন রাজনৈতিক ন্যারেটিভ চায়। গণতন্ত্র, চাকরি ও জলবায়ু সংকটে কার্যকর নীতির মাধ্যমে বিএনপি তাদের আকর্ষণ করতে পারে।
আন্তর্জাতিক চাপ: পশ্চিমা দেশগুলোর গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের দাবি বিএনপির পক্ষে সুবিধা তৈরি করতে পারে। সরকারকে অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচনের জন্য চাপ বাড়লে বিএনপির রাজনৈতিক পুনরুত্থানের পথ খুলতে পারে।
মধ্যপন্থী এজেন্ডা: অর্থনৈতিক উদারনীতি, স্থানীয় সরকার শক্তিশালীকরণ ,শিক্ষা ব্যবস্থা আধুনিকীকরণ এবং ইসলামিক মূল্যবোধের সাথে গণতন্ত্রের সমন্বয়—এসব নীতিতে জোর দিয়ে দলটি একটি “মধ্যপন্থী বিকল্প” হিসেবে আবির্ভূত হতে পারে।

ভবিষ্যতের জন্য কৌশল:
অভ্যন্তরীণ সংস্কার: তরুণ, প্রযুক্তিবান্ধব নেতৃত্বের উত্থান, নারী ও সংখ্যালঘু প্রতিনিধিত্ব বাড়ানো এবং অন্তদলীয় গণতন্ত্র চর্চা ও নেতৃত্বের সকল পর্যায়ে চলমান এবং দৃশ্যমান জবাবদিহিতা রাখা অপরিহার্য।
জোট গঠন: ছোট দল গুলোর সাথে নিবিড় সম্পর্ক উন্নয়ন ও নাগরিক সমাজের সাথে মৈত্রী বিএনপির বিচ্ছিন্নতা কমাতে পারে। ২০২৪-এর নির্বাচনে “গণতান্ত্রিক জোট” এর আংশিক সাফল্য এ দিকে ইঙ্গিত করে।
অহিংস ও সংলাপভিত্তিক রাজনীতি: সহিংসতা পরিহার এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সাথে কূটনৈতিক সম্পৃক্ততা দলের বিশ্বাসযোগ্যতা ফিরিয়ে আনতে পারে। যা ইতিমধ্যেই দৃশ্যমান হয়েছে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমানের সাথে পশ্চিমা দেশগুলোর অ্যাম্বাসারদের সাথে সফল আলোচনা জনমনে ব্যাপক আশার সঞ্চার করেছে।
ডিজিটাল রূপান্তর: সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যুবশক্তিকে সংগঠিত করে সমসাময়িক ইস্যুতে (যেমন: জব মার্কেট, ফ্রিল্যান্সিং,জলবায়ু অভিবাসন) ক্যাম্পেইন চালানো যেতে পারে। যা বর্তমান বিশ্বে যুব সমাজকে কর্মমুখী করার অন্যতম মাধ্যম।

সম্ভাব্য পরিণতি:
পুনরুত্থান: যদি অর্থনৈতিক সংকট গভীর হয় , সামাজিক অস্থিরতা বৃদ্ধি পায় ও সরকার দ্রুত নির্বাচনে রাজি হয়, তাহলে বিএনপি ২০২৬ সালের নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে।
প্রান্তিককরণ: দলীয় বিভাজন ও নেতৃত্বের দুর্বলতা চলতে থাকলে বিএনপি প্রভাবহীন হয়ে পড়তে পারে, এবং ক্ষুদ্র দলগুলো তার ভোটব্যাংক ভাগ করে নিতে পারে।
মধ্যপন্থী প্ল্যাটফর্ম হিসেবে টিকে থাকা: দলটি যদি সত্যিকার অর্থে মধ্যপন্থী নীতি গ্রহণ করে (জঙ্গিবাদ-মুক্ত, উন্নয়নমুখী, গণতান্ত্রিক), তাহলে এটি একটি স্থায়ী বিকল্প শক্তি হিসাবে টিকে থাকতে পারে সুদীর্ঘকাল।

উপসংহার:
বিএনপির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে তার “”কৌশলগত পুনর্গঠন””, “”নেতত্বের রূপান্তর”” এবং **পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের সাথে খাপ খাওয়ানোর সক্ষমতার উপর। মধ্যপন্থী অবস্থান নেওয়া এবং একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ (যেমন: ডিজিটাল গভর্ন্যান্স, জলবায়ু ন্যায়বিচার) মোকাবিলায় কার্যকর নীতির প্রস্তাব দিলে দলটি জনসমর্থন ফিরে পেতে পারে অধিক হারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য ফিরে এলে বিএনপির জন্য একটি “মধ্যপন্থী শক্তি” হিসেবে পুনরুত্থানের সুযোগ থাকলেও, তা এখনও অনিশ্চিত।

মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া
প্রধান সম্পাদক, ধানের শীষ ডট নেট
www.dhanershis.net

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট