
মোঃ হাসান আলী রেজা (দোজা)
পুরোদমে নির্বাচনী মেজাজে বিএনপি। দেশের বিভিন্ন আসনে গণসংযোগে ব্যস্ত বিএনপির একাধিক প্রার্থী এবং নানা জায়গায় তৈরি হয়েছে সংঘাতময় পরিস্থিতি। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে ভোটের মাঠে। তাই কয়েক সপ্তাহ ধরে বিএনপি চেয়ারপারসনের গুলশান অফিসে বিভিন্ন জেলার সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিয়ে বৈঠক করছেন দায়িত্বশীল নেতারা। কোনও কোনও বৈঠকে ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও। তেমন একটি বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বগুড়ার জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন। সেই বৈঠকের ফলশ্রুতিতে স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তে এক আসনে একজন প্রার্থীকে টেলিফোন করতে শুরু করেছেন বিএনপির শীর্ষ নেতা তারেক রহমান।
বগুড়া-১ আসনে কাজী রফিকুল ইসলাম, বগুড়া-৩-এ আবদুল মোহিত তালুকদার, বগুড়া-৪ আসনে মোশারফ হোসেন, বগুড়া-৫-এ জি এম সিরাজ এবং মেহেরপুর ১ আসনে মাসুদ অরুণ ও মেহেরপুর ২ আমজাদ হোসেন প্রার্থিতার জন্য ফোন পাওয়ার কথা নিশ্চিত করেন। বগুড়া ৪ আসনের মোশারফ হোসেন বললেন, আমাকে সরাসরি তিনি (তারেক রহমান) ফোন দিয়েছেন, তারপর জানলাম বাকি আরও তিনজনকে ফোন দিয়েছেন কাজ করার জন্য। এটা এখন আপনি সবুজ সংকেত বলেন, আর যদি বলেন যে উনি বলেছেন, এটা যেকোনো ব্যাখ্যায় বলতে পারেন। একটি আসনে বেশ কয়েকজন প্রার্থী আছে, সবাইকে তো তিনি ফোন দেননি।
মেহেরপুর ২ আসনের প্রার্থী আমজাদ হোসেন বলেন, আমাকে যেমন বলেছে, গাংনীতে আপনি ধানের শীষকে তৈরি দেবেন এবং আমাদের হাতে তুলে দিতে হবে।মেহেরপুর ১ আসনের সাবেক এমপি মাসুদ অরুণ জানালেন, জনগণের সঙ্গে থাকেন, জনগণকে সঙ্গে রাখেন, এই বিবেচনাবোধকে সামনে রেখে তাদেরকে মাঠে কাজ করতে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। এদিকে, রাজধানীতেও সম্ভাব্য প্রার্থীদের মাঠে নামার নির্দেশনা দিতে শুরু করেছে বিএনপি। যার মধ্যে ঢাকা-১৬ আসনে আমিনুল হক, ঢাকা-৪-এ তানভীর আহমেদ রবিনের নাম রয়েছে তালিকায়।
এছাড়া, জোটমিত্র ববি হাজ্জাজকে ঢাকা-১৩, আন্দালিব রহমান পার্থকে বিবেচনা করা হচ্ছে ঢাকা-১৭ আসনে। নির্দলীয় প্রার্থী রাখা হতে পারে ঢাকা-১৪ আসনে। বাকি আসনের সিদ্ধান্ত নির্ভর করছে মিত্রদের সাথে বোঝাপড়ার ওপর। ঢাকা মহানগর বিএনপি আহ্বায়ক আমিনুল হক বলেছেন, মৌখিক যে নির্দেশনা পেয়েছি সেই নির্দেশনা মোতাবেক আমি সাধারণ মানুষের কাছে যাচ্ছি। পাশাপাশি ইতোমধ্যে আমাদের জোটের ববি হাজ্জাজকে ঢাকা -১৩ এবং ঢাকা-১৭ থেকে আন্দালিব রহমান পার্থকে ইতোমধ্যে বলে দেয়া হয়েছে।
এদিকে, ডিসেম্বরে নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার কথা জানিয়েছেন সিইসি। তবুও এত আগে কেন বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্ত করার তোড়জোড়? বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য হাফিজ উদ্দিন আহমদ বললেন, ভুল বুঝাবুঝি পরিষ্কার করা এবং মাফিয়া আওয়ামী লীগ সরকারের যত অপকর্ম, এগুলো জনগণকে জানান দেয়ার জন্য সময় প্রয়োজন। নির্বাচনী তফসিলে যে অল্প সময় পাওয়া যায়, সে সময় এই দলটির প্রকৃত চরিত্র উদঘাটন করা সম্ভব না, সেজন্যই আমরা একটু আগে থেকে নামতে চাই। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান অল্প কয়েকজনকে বলেছেন, যাদের ওখানে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা নাই।
মনোনয়ন প্রত্যাশীদের সাক্ষাৎকার শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিকভাবে চূড়ান্ত হবে বিএনপির তিনশ আসনের একক প্রার্থী। তবে, জোটবদ্ধ রাজনৈতিক কৌশলের কারণে মনোনয়ন প্রত্যাহার আগে পরিবর্তন আসবে অন্তত ৫০ আসনে।
লেখক : মোঃ হাসান আলী রেজা (দোজা)
সাংবাদিক ও মানবাধিকার কর্মী
প্রকাশক : www.dhanershis.net