1. info@www.dhanershis.net : ধানের শীষ :
পাঁচ ব্যাংক নিয়ে ইসলামী ধারার বড় ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত - ধানের শীষ
শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ০৮:২০ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
ঈদ উদযাপন ঘিরে নানা কর্মসূচি বিএনপির পাঁচ ব্যাংক নিয়ে ইসলামী ধারার বড় ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত নির্বাচনে প্রতিটি দল থেকে ২০ শতাংশ নারী প্রার্থী রাখার প্রস্তাব ভারত থেকে ‘পুশ ইন’ ঠেকানো সম্ভব নয়: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা বীর মুক্তিযোদ্ধার সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে অধ্যাদেশ জারি, সহায়তাকারীরা পাচ্ছেন বিশেষ স্বীকৃতি বাজেটে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধান পরিপন্থি : টিআইবি জুলাইয়ে সংস্কার, ডিসেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন চায় জামায়াত মহাদেবপুর উপজেলা কৃষকদলের আয়োজনে নওগাঁয় গ্রামীণ নারীদের নিয়ে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত শহীদ জিয়াউর রহমানের শাহাদৎ বার্ষিকীতে নওগাঁয় অসহায় শিশুদের মাঝে খাবার বিতরণ মেজর সিনহা হত্যা: আপিলে ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের ফাঁসি বহাল

পাঁচ ব্যাংক নিয়ে ইসলামী ধারার বড় ব্যাংক গঠনের সিদ্ধান্ত

প্রতিবেদকের নাম:
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ৫ জুন, ২০২৫
  • ১৯ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক : আর্থিক সংকটের কারণে চড়াই উতরাই পার করছে দেশের শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক। তাই এই পাঁচ ব্যাংককে রক্ষা করতে একটি বড় ইসলামি ধারার ব্যাংক গঠন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। শুরুতে এই নতুন ইসলামি ধারার ব্যাংকে মূলধনের জোগান দেবে অন্তর্বর্তী সরকার। ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতে (এসএমই) অর্থায়ন করাই হবে ব্যাংকটির প্রধান কাজ। এই ব্যাংকের অনুমোদন (লাইসেন্স) দেবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর অধীনে এই পাঁচ ব্যাংকের আমানত ও সম্পদ স্থানান্তর করা হবে। এই প্রক্রিয়া শুরু হবে ঈদের ছুটির পরই।

বুধবার ওই পাঁচটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের (এমডি) ডেকে এই প্রাথমিক সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। সভায় ব্যাংকগুলোকে একীভূত হওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সভায় অংশ নেওয়া পাঁচ ব্যাংকের কর্মকর্তারা এ তথ্য জানান।

তারা বলেছেন, শরিয়াহভিত্তিক পাঁচ ব্যাংক একীভূত হলেও গ্রাহকদের লেনদেনে কোনো সমস্যা হবে না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে নতুন ব্যাংকটির গ্রাহক হবেন তারা। এছাড়া শীর্ষ পর্যায় ব্যতীত অন্য ব্যাংকাররা একীভূতকরণের প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত চাকরিতে বহাল থাকবেন। ধারণা করা হচ্ছে, এ প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত তিন বছর লাগতে পারে।

ব্যাংক পাঁচটি হলো ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক ও ইউনিয়ন ব্যাংক। এর আগে, গত ৯ এপ্রিল ব্যাংকিং সম্মেলনে বাংলাদেশ গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেন, ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো একীভূত করে বড় দুটি ব্যাংক গড়ে তোলা হবে।

একীভূত হতে যাওয়া পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে এক্সিম ব্যাংকের মালিকানায় রয়েছে আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী নজরুল ইসলাম মজুমদার। আরও বাকি চার ব্যাংকের মালিকানা রয়েছে পতিত স্বৈরাচার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘনিষ্ঠ এস আলম গ্রুপের কাছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে এসব ব্যাংক থেকে বিভিন্ন নামে অর্থ তুলে নেন এসব মালিক। এতে ব্যাংকগুলো দুর্বল হয়ে পড়ে।

গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নিয়েছে এই পাঁচ ব্যাংকের নতুন পর্ষদ। এক্সিম ব্যাংক ছাড়া বাকি চারটিতে স্বতন্ত্র পরিচালকদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

জানা গেছে, ঈদের ছুটির পর পাঁচ ব্যাংক পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হবে বাংলাদেশ ব্যাংক। এ জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিয়ে ব্যাংকগুলো পরিচালনায় আলাদা কমিটি গঠন করা হবে। ইতোমধ্যে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে এই পাঁচ ব্যাংকের সম্পদের মান নিরীক্ষা শেষ হয়েছে। এসব ব্যাংককে নিরীক্ষা প্রতিবেদন নিয়ে কোনো আপত্তি থাকলে তা জানানোর সুযোগ দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে এই পাঁচ ব্যাংকের কেউ নিজেকে সবল প্রমাণ করতে পারলে নতুন ব্যাংকের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হবে। আর তা না হলে শুরু হবে একীভূত প্রক্রিয়া। এই কার্যক্রম শুরু হবে ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ ২০২৫-এর আওতায়। আর এই প্রক্রিয়া শেষ হবে আগামী ১৫ অক্টোবরের মধ্যে।

একীভূতকরণের আওতায় ব্যাংকগুলোর যেসব ঋণ খারাপ হয়ে পড়েছে, তা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানির (এএমসি) কাছে হস্তান্তর করা হবে। এমনভাবে সম্পদ হস্তান্তর করা হবে, যাতে নতুন ব্যাংকটির খেলাপি ঋণ থাকে ১০ শতাংশের নিচে। এতে বিদেশি বাণিজ্যে লেনদেনে খরচ কম হবে ও বাংলাদেশ ব্যাংকের পুনঃ অর্থায়ন তহবিল থেকে ব্যাংক টাকা নিতে পারবে।

এরপর নতুন একটি ব্যাংকের নামে লাইসেন্স অনুমোদন দেওয়া হবে। এতে বাংলাদেশ সরকার ও বিদেশি উন্নয়ন-সহযোগীরা মূলধন জোগান দেবে। এজন্য ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে বরাদ্দ রাখা হয়েছে। পাঁচ ব্যাংকের সম্পদ ও দায় সেই ব্যাংকের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এরপর ধীরে ধীরে একীভূত করা হবে ব্যাংকের শাখাগুলো। এ জন্য জনবলও কমানো হবে। ব্যাংক পূর্ণাঙ্গভাবে যাত্রা শুরুর পর বেসরকারি খাতে শেয়ার ছাড়া হবে। এরপর ব্যাংকটি পরিচালনায় যুক্ত হতে পারবেন বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা। এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে অন্তত তিন বছর সময় লাগতে পারে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সভায় ব্যাংক পাঁচটির চেয়ারম্যান ও এমডিদের এমন সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানান গভর্নর আহসান এইচ মনসুর ও ডেপুটি গভর্নর কবির আহম্মদ। পাঁচ ব্যাংকের মধ্যে এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে বলে সভায় জানান ব্যাংক দুটির চেয়ারম্যানরা।

সভার বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন বলেন, পাঁচ ব্যাংক মিলে একটি বড় ব্যাংক গঠনের কথা জানানো হয়েছে। এর আগে কেউ নিজেকে ভালো প্রমাণ করতে পারলে সেই ব্যাংক তালিকা থেকে বাদ যাবে। এ জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে সবাই কাজ করতে রাজি হয়েছে। এই সভার মাধ্যমে ব্যাংক রেজল্যুশনের প্রক্রিয়াটা শুরু হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, সারা দেশে ওই পাঁচ ব্যাংকের ৭৭৯টি শাখা রয়েছে। এর মধ্যে ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের ২২৬টি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৮০টি, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ১০৪টি, ইউনিয়ন ব্যাংকের ১১৪টি ও এক্সিম ব্যাংকের ১৫৫টি। এছাড়া, এসব ব্যাংকের ৬৯৮ উপশাখা, ৫০০ এজেন্ট ও এক হাজার এটিএম বুথ রয়েছে।

ব্যাংকগুলোতে ১৫ হাজারের বেশি জনবল রয়েছে। এসব ব্যাংকের সব মিলিয়ে গ্রাহকের হিসাবের সংখ্যা ৯২ লাখ। আমানত ১ লাখ ৪৫ হাজার কোটি টাকা, তবে ঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ধার করে আমানতের চেয়ে বেশি ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইউনিয়ন ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ৯০ শতাংশ ঋণ এস আলম গ্রুপের কাছে, যা খেলাপি হয়ে পড়ছে। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ৭০ শতাংশ ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ২০ শতাংশ ঋণ এস আলম সংশ্লিষ্ট। এক্সিম ব্যাংকের ১০ শতাংশ ঋণ সাবেক চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম মজুমদারের স্বার্থসংশ্লিষ্ট। ব্যাংকগুলো এসব ঋণ আদায় করতে পারছে না।

ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবদুল মান্নান বলেন, দেশে বড় আকারের একটা ইসলামি ধারার ব্যাংক গঠনের কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

এর মাধ্যমে দেশে ইসলামি ব্যাংক খাতের নতুন সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ মোস্তফা কে মুজেরীর মতে, জবাবদিহি না ফিরলে ব্যাংক একীভূত করেও ব্যাংক খাত ঠিক হবে না। তিনি বলেন, যদি রাজনৈতিক লুটপাটের লক্ষ্য হয় এবং আর্থিক খাতের মূল সংস্কারগুলো না হয়, তাহলে কাজ হবে না। এ জন্য আগে সুশাসন, জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। গত ৯ মাসেও আর্থিক খাতে পুরোপুরি সুশাসন ফেরেনি। কেন এই সময়ে ব্যাংকগুলো ঘুরে দাঁড়াতে পারল না, এটাও বড় প্রশ্ন।

মোস্তফা কে মুজেরী আরও বলেন, ব্যাংক একীভূত করে ভালোভাবে পরিচালনা করা গেলে সেটা ভালো কিছু হবে। এ জন্য কারা পরিচালনা করবে ও সুশাসন কতটা মেনে চলবে, সেটা গুরুত্বপূর্ণ।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট