প্রায় আড়াই মাস পর তালাবদ্ধ বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয় খুলেছে দলটির নেতাকর্মীরা। বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার সময় তালা ভেঙে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে কার্যালয়ের ভিতরে ঢুকে তারা। কার্যালয় খোলার খবরে দুপুর ১২টার মধ্যেই নেতাকর্মীদের ভিড়ে মুখরিত হয়ে পড়ে পুরো কার্যালয়ে।
গত বছরে ২৮ অক্টোবরের পর শুনশান নীরবতা ছিল নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়। ৭৪ দিন পর নেতাকর্মীদের আনাগোনায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে দলীয় কার্যালয়।
নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের ভেতরে প্রবেশ করে দেখা গেছে পুরো কার্যালয় ধুলোবালির স্তূপ জমেছে। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে এলোমেলোভাবে পড়ে আছে চেয়ার টেবিল, কাগজপত্র, পত্রিকা প্রভৃতি জিনিসপত্র। কার্যালয়ে প্রবেশ করার সময় সরকার বিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন দলটির নেতাকর্মীরা।
দুপুর দুইটার সময় বিএনপি কার্যালয়ের সামনে জড়ো হন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন শত শত নেতাকর্মী। এসময় তারা সরকারের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন।
দীর্ঘদিন পর দলীয় কার্যালয় খোলার পর বৃহস্পতিবার বিকালে বিএনপির ডাকা সংবাদ সম্মেলনেও ছিল গণমাধ্যমকর্মীদের উপচে পড়া ভিড়। স্থান সংকুলান না হওয়ায় ফ্লোরে বসে সংবাদ সম্মেলন কাভার করতে হয়।
এদিকে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ের বিপরীতে ভাসানী মিলনায়তনে অবস্থিত ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের কার্যালয়ও প্রায় আড়াই মাস খোলা হয়।
তালা ভাঙার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ঢাকা টাইমসকে রিজভী বলেন, সেই দিনের তাণ্ডবের পর আপনারা দেখেছেন আপনাদের চোখের সামনে তালা লাগিয়ে পুলিশ চাবিয়ে নিয়ে যায়। এরপর কত নাটক ওরা করেছে। আমরা পুলিশের কাছে চাবি চেয়েছিলাম। সেটা তারা দেয়নি।
কার্যালয়ের সামনে নেতাকর্মীদের ভিড়
রিজভী বলেন, দেশের একটি নিয়মতান্ত্রিক কার্যকর রাজনৈতিক দল বিএনপি। এই দল বারবার রাষ্ট্র পরিচালনা করেছে অত্যন্ত সুনামের সাথে, দক্ষতার সাথে। সেই দলের প্রধান কার্যালয় একটি মাফিয়াতন্ত্র, একটি মাফিয়া সরকার বন্ধ করে রেখেছে। সুতরাং পুলিশ চাবি না দেওয়াতে তালা ভেঙে আমরা ঢুকেছি।
বিএনপির সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ঢাকা বলেন, ২৮ অক্টোবরের পর থেকে কোনো কার্যক্রম করতে পারিনি এই কার্যালয়ে। একপ্রকারের পুলিশি বেষ্টনীতে ছিল অফিসটি।
ছাত্রদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. তৌহিদুর রহমান আউয়াল বলেন, বিএনপির প্রতিটি নেতাকর্মীর জন্য এই কার্যালয়টি তীর্থস্থানের মতো। এখানে না আসলে মনের তৃপ্তির পূর্ণ হয় না।
গত ২৮ অক্টোবর দুপুরে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ পুলিশ টিয়ারগ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে পণ্ড করে দেওয়ার পর থেকে এই কার্যালয় থেকে নেতাকর্মীদের বের করে দিয়ে তালা লাগিয়ে চাবি নিয়ে যায়। এরপর থেকে সিআইডির ‘ক্রাইম সিন’ স্টিকার লাগিয়ে কার্যালয়ের সামনে সকলের প্রবেশ বন্ধ করে রাখে এবং এখান থেকে তারা ১১টি আলামত সংগ্রহ করে।