অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, পুলিশ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন যে বিবৃতি দিয়েছে তা সংবিধান পরিপন্থি। তিনি বলেন, একজন পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির খবর প্রকাশিত হওয়া মানে গোটা ডিপার্টমেন্টের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ নয়। বিবৃতি দেওয়ায় প্রমাণিত হয়েছে আরও অনেক কর্মকর্তা দুর্নীতিতে জড়িত। তাদের দুর্নীতির খবর চাপা দিতে এ বিবৃতি দেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকালে রাজধানীর স্কাউট ভবনে শিক্ষক কর্মচারী ঐক্যজোট আয়োজিত দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার রোগ মুক্তি কামনা করে এ দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়। পরে বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনা করে বিশেষ দোয়া করা হয়।
এ সময় বিএনপির মুখপাত্র আরও বলেন, পুলিশের সাবেক আইজিপি বেনজীর ও সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজের দুর্নীতির কাহিনি বেরিয়ে আসছে। তাদেরসহ আওয়ামী লীগ নেতাদের দুর্নীতির কেচ্ছা কাহিনি সবার সামনে বেরিয়ে আসছে। দেশের জন্য লক্ষ লক্ষ গণতন্ত্রকামী মানুষ জীবন দিয়েছেন, নির্যাতিত হয়েছেন বেনজীরদের জন্য, আছাদুজ্জামান মিয়াদের জন্য, আওয়ামী লীগের এমপিদের জন্য।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের ছেলেমেয়েদের কারও কারও বিরুদ্ধে ৫০ মিলিয়ন ডলারের খবর পাওয়া যায়। এখন আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রশাসনের ব্যক্তিরা শেখ হাসিনাকে অবৈধভাবে ক্ষমতায় রাখার জন্য যা খুশি তাই করছে।
তিনি বলেন, এক রাজস্ব কর্মকর্তার ছেলে ১৫ লাখ টাকা দিয়ে ছাগল কিনছে। তিনি এক মন্ত্রীর পিএস ছিলেন। যত গুরুত্বপূর্ণ পদ দরকার তিনি পেয়েছেন এবং তিনি সেগুলো ব্যবহার করছেন। তার স্ত্রীর নামে বিশাল ডুপ্লেক্স বাড়ি এক জেলায়, আরেক জেলায় আরেক স্ত্রীর নামে অনেক সম্পত্তি করেছেন। কার নামে কত সম্পত্তি রাখবেন এই লোক তারা খুঁজে পাচ্ছেন না। এসব করার পরে আর কোথায় রাখবে সেগুলো এখন বেরিয়ে আসছে বিভিন্ন জায়গা থেকে। এই যে আজকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দুর্নীতির কাহিনি ভয়াবহ আরব্য উপন্যাসের মতো বেরিয়ে আসছে। বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, যেখানে সাধারণ মানুষ জীবন চালাতে হিমশিম খাচ্ছে সেখানে দুর্নীতিবাজদের ছেলেমেয়েরা রাজকীয় জীবনযাপন করছে।
শেখ হাসিনাকে অবৈধ ক্ষমতায় টিকে রাখার জন্য বেনজীর, আছাদুজ্জামান মিয়ারা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গুম করেছে। রাতের অন্ধকারে এরা নির্বাচন করে দিয়েছে। তার প্রতিদান হিসেবে এখন জমি দখল করে, গরিব মানুষের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল করে টাকার পাহাড় গড়ছেন। এতে শেখ হাসিনা খুশি কারণ তারা তাকে ক্ষমতার টিকিয়ে রাখছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অনেক কর্মকর্তা আত্মস্বীকৃতি অপকর্ম করেছে।
তারা গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সময় বলেছেন সরকারের বিরুদ্ধে কেউ কোনো কাজ করলে আমরা তা কঠোর হস্তে দমন করব। আন্দোলনকামী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীকে রক্তাক্তভাবে দমন করেছে। তার পরিবর্তে তারা যা খুশি তাই করছে। এগুলো গণমাধ্যমে এখন বেরিয়ে আসছে। সুতরাং সরকারের দায়িত্ব গণমাধ্যমকে থামানো। সরকার পক্ষ থেকে থামানো তাই পুলিশ স্টেটমেন্ট দিয়েছে। কারো দুর্নীতির অভিযোগ এলে আইনের মাধ্যমে বিচার হবে। কিন্তু পুলিশ প্রতিবাদ করছে কেন। পুলিশ সদস্যরা দুর্নীতি করে টাকা বিদেশে পাচার করছে বলেই তারা আজ প্রতিবাদ করছে। যা সংবিধান বিরোধী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এভাবে স্টেটমেন্ট দিতে পারে না।
অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়ার সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, শিক্ষক নেতা জাকির হোসেন, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য সদস্য ওমর ফারুক শাফিন, সালাউদ্দিন শিশির, কৃষক দলের যুগ্ম সম্পাদক কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশ, বিএনপি নেতা বেলাল উদ্দিন সরকার তুহিন, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।