1. onemediabd@gmail.com : admin2 :
  2. info@www.dhanershis.net : ধানের শীষ :
পোস্ট-ইসলাম ইজম, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও দক্ষিণ এশীয় প্রেক্ষাপট: একটি তুলনামূলক অনুসন্ধান - ধানের শীষ
সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ০৫:৫৯ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
হামলা-হেনস্তায় মনোবল হারাচ্ছে পুলিশ বাহিনী নানা অনিয়মে বিএনপির সাত হাজার নেতা-কর্মী বহিষ্কার: মামুন মাহমুদ রাজধানীতে বিএনপির ব্যতিক্রমী মিছিল হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেন খালেদা জিয়া ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষরের মহেন্দ্রক্ষন এবং দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার উপস্থিতি কি জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করবে? ৩১৫ বি৩ লায়ন্স ইন্টারন্যাশনাল এর বাৎসরিক গ্রান্ড র‍্যালি অনুষ্ঠিত উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতেই হবে: প্রধান উপদেষ্টা ঐতিহাসিক জুলাই সনদ স্বাক্ষর এবং “ঝুলে” যাওয়া ফেব্রুয়ারির কাঙ্ক্ষিত জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাকসু নির্বাচনের ভোটগ্রহণ; ৩৬ বছরের প্রতীক্ষার অবসান কোন পদ্ধতিতে ভোট হবে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ : ডা. জাহিদ

পোস্ট-ইসলাম ইজম, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ ও দক্ষিণ এশীয় প্রেক্ষাপট: একটি তুলনামূলক অনুসন্ধান

মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া
  • প্রকাশিত: বৃহস্পতিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫
  • ১৯৭ বার পড়া হয়েছে

মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া

ভূমিকা
বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতে ইসলামী ও বিএনপির সম্পর্ক নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক রয়েছে। একদিকে জামায়াতের আদর্শিক ভিত্তি ইসলামি রাষ্ট্রকল্পনা, অন্যদিকে বিএনপির বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ—এই দুই ধারা কীভাবে একে অপরকে ছেদ করেছে, আবার সহযোগিতায় গিয়েছে, সেটি এক জটিল রাজনৈতিক বাস্তবতা। সাম্প্রতিক সময়ে “পোস্ট-ইসলাম ইজম” ধারণার আলোকে প্রশ্ন উঠে আসে: জামায়াত কি আদর্শের পরিবর্তনে বাধ্য হয়েছে নাকি এটি কেবল টিকে থাকার কৌশল? বিএনপির জাতীয়তাবাদ কি ইসলামভিত্তিক রাজনীতিকে আড়াল করে নাকি ব্যবহার করে?

এই প্রশ্নগুলো কেবল বাংলাদেশের নয়; দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য রাষ্ট্রেও ইসলামি ও জাতীয়তাবাদী রাজনীতির সম্পর্ক নিয়ে একই ধরনের টানাপোড়েন বিদ্যমান। পাকিস্তানের জামায়াতে ইসলামী–পিএমএল (Pakistan Muslim League) সম্পর্ক কিংবা ভারতের বিজেপি বনাম মুসলিম লীগের ঐতিহাসিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাংলাদেশের অভিজ্ঞতাকে তুলনামূলক আলোচনায় সাহায্য করে।

১. বাংলাদেশ: জামায়াতে ইসলামী বনাম বিএনপি

প্রশ্ন এক: জামায়াত কেন ইসলামি রাষ্ট্রকল্পনা থেকে সরে এসে পোস্ট-ইসলাম ইজমের পথে হাঁটলো?

মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তী নিষেধাজ্ঞা ও জনসমর্থনের সংকট কি তাদেরকে বাস্তববাদী হতে বাধ্য করেছে?

প্রশ্ন দুই: বিএনপি কেন বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদের ভেতর ধর্মীয় পরিচয়কে রাজনৈতিক কৌশল হিসেবে ব্যবহার করলো?

এটি কি গণভোটে শক্তি বৃদ্ধি, নাকি আদর্শগত প্রয়োজন?

উত্তর খুঁজতে গেলে দেখা যায়, জামায়াত এখন আর শরীয়াহভিত্তিক রাষ্ট্রের সরাসরি দাবি তোলে না; বরং সামাজিক রক্ষণশীলতা ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের মাধ্যমে টিকে থাকার চেষ্টা করে। অন্যদিকে বিএনপি, ধর্মকে রাষ্ট্র কাঠামোর কেন্দ্রে না রেখে, জাতীয় পরিচয়ের অংশ হিসেবে ব্যবহার করে রাজনৈতিক সম্প্রসারণ ঘটায়।

২. পাকিস্তান: জামায়াতে ইসলামী বনাম পিএমএল

প্রশ্ন তিন: পাকিস্তানে জামায়াতে ইসলামী কেন ধারাবাহিকভাবে মূলধারার জাতীয়তাবাদী দলগুলোর (বিশেষত পিএমএল–এর) ছায়ায় রাজনীতি করে?

প্রশ্ন চার: পিএমএল কি আদর্শগত কারণে ইসলামি শক্তির সঙ্গে যুক্ত হয়, নাকি কেবল ভোটব্যাংকের জন্য?

পাকিস্তানে জামায়াতের মূল লক্ষ্য ছিল ইসলামি শাসন কায়েম, কিন্তু বাস্তবতায় তারা নির্বাচনী রাজনীতিতে দুর্বল। ফলে বারবার মুসলিম লীগ–ভিত্তিক জোটের অংশ হয়ে নিজেদের প্রাসঙ্গিক রাখে। একইসাথে, পিএমএল–এর জন্য জামায়াত একটি ধর্মীয় বৈধতার সরবরাহকারী শক্তি হিসেবে কাজ করে। বাংলাদেশের মতো পাকিস্তানেও ইসলামি দলগুলো টিকে থাকে বড় জাতীয়তাবাদী বা মূলধারার দলে ভর করে।

৩. ভারত: বিজেপি বনাম মুসলিম লীগ

প্রশ্ন পাঁচ: ভারতীয় প্রেক্ষাপটে মুসলিম লীগের অবলুপ্তি এবং বিজেপির উত্থান কীভাবে ধর্ম ও জাতীয়তাবাদের সম্পর্ককে পাল্টে দিল?

প্রশ্ন ছয়: বিজেপি কি কেবল হিন্দু জাতীয়তাবাদের দল, নাকি এটি ভারতের রাজনৈতিক বাস্তবতায় “ধর্মভিত্তিক সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতীয়তাবাদ”-এর একটি রূপ?

ভারতের মুসলিম লীগ একসময় মুসলিম স্বার্থরক্ষার দল হলেও স্বাধীনতার পর ধীরে ধীরে প্রান্তিক হয়ে পড়ে। বিপরীতে বিজেপি ধর্মকে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জাতীয়তাবাদের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহার করে রাষ্ট্র ক্ষমতায় পৌঁছায়। বাংলাদেশের বিএনপির মতো তারা “জাতীয়তাবাদ”–এর ছত্রছায়ায় ধর্মীয় পরিচয় ব্যবহার করেছে, তবে ভিন্নভাবে—সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়কে রাজনৈতিকভাবে একীভূত করার মাধ্যমে।

৪. তুলনামূলক বিশ্লেষণ

এখন প্রশ্ন করা যায়:
বাংলাদেশে জামায়াত কেন বিএনপির ছায়ায়, আর পাকিস্তানে জামায়াত কেন পিএমএল–এর ছায়ায়—এ দুই অভিজ্ঞতা কি একই রকম অভিযোজন?

ভারতের মুসলিম লীগের পতন এবং বিজেপির উত্থান কি দেখায় যে সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতীয়তাবাদ ধর্মীয় দলগুলোকেও অতিক্রম করতে পারে?

দক্ষিণ এশিয়ার এই অভিজ্ঞতাগুলো কি প্রমাণ করে যে ধর্মভিত্তিক দলগুলো একা রাষ্ট্র কাঠামো নির্ধারণ করতে পারে না, বরং বড় জাতীয়তাবাদী শক্তির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়ে?

সর্বশেষ
বাংলাদেশে পোস্ট-ইসলাম ইজমের আবির্ভাব জামায়াতকে আদর্শিক থেকে বাস্তববাদী রাজনীতির দিকে ঠেলে দিয়েছে। বিএনপি তার বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদে ধর্মীয় পরিচয়কে ব্যবহার করে নিজেদের শক্তি বাড়িয়েছে। পাকিস্তানে জামায়াত–পিএমএল সম্পর্ক একই ধরনের সহযোগিতা-নির্ভর বাস্তবতার প্রতিফলন। আর ভারতের বিজেপি বনাম মুসলিম লীগ অভিজ্ঞতা দেখায়—ধর্ম ও জাতীয়তাবাদের সম্পর্ক কেবল আপস নয়, কখনো কখনো একে অপরকে অতিক্রম করার প্রক্রিয়াও হতে পারে।

সুতরাং, দক্ষিণ এশীয় প্রেক্ষাপটে প্রশ্নটি থেকেই যায়: ধর্মভিত্তিক রাজনীতি কি স্বাধীনভাবে ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে, নাকি জাতীয়তাবাদী শক্তির সঙ্গে আপস ও অভিযোজনের মাধ্যমেই টিকে থাকবে?

লেখক :-
মোহাম্মদ এহসানুল হক ভূঁইয়া
প্রধান সম্পাদক, www.dhanershis.net

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
প্রযুক্তি সহায়তায়: ইয়োলো হোস্ট