অনলাইন ডেস্ক : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘দেশ বিক্রি করার মহাজন হচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি ভারতকে নিরাপদ করতে বাংলাদেশকে অনিরাপদ করেছেন। বাংলাদেশকে ভারতের নয়া উপনিবেশ বানানোর চেষ্টা করছেন প্রধানমন্ত্রী।’
ওলামা দলের আহ্বায়ক কমিটির পরিচিতি সভায় অংশ নিয়ে রিজভী এসব বলেন। শনিবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ ভাসানী ভবনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, রেল চুক্তির মাধ্যমে করিডোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছেন। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য শেখ হাসিনার কবল থেকে দেশকে মুক্ত করতে হবে।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ১৯৫ জন সফরসঙ্গী নিয়ে চীন সফরে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। শূন্য হাতে তিনি দেশে ফিরেছেন। চীনের কাছে ২০ বিলিয়ন ডলার চেয়েছিলেন, ১ বিলিয়ন ইয়ানের আশ্বাস পেয়েছেন। ২০ বিলিয়ন ডলার চেয়ে খালি ঝুড়ি নিয়ে ফেরত এসেছেন।
রিজভী বলেন, জুলাই মাস হলো আমাদের আমের মৌসুম, আর দেশে এখন দুর্নীতি ফাঁসের মৌসুম চলছে। আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠদের নাম প্রতিদিন পাওয়া যাচ্ছে। আজিজ বেনজীর মতিউর, আবেদ আলীদের নাম গণমাধ্যমে ফাঁস হচ্ছে। কিন্তু এখনও রাঘব বোয়ালদের নাম আসেনি। সরকারের মধ্যে এখনও হাজারও আজিজ-বেনজীর রয়ে গেছে।
সরকারের সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ২০১৮ সালে কোটা বাদ দিলেন। শিক্ষার্থীরা কোটা বাদ নয়, সংস্কার চেয়েছিল। কিন্তু তিনি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে কোটা বাদ দিয়ে এখন ক্ষমতা পাকাপোক্ত করে আবার কোটা বহাল করলেন আদালতের মাধ্যমে। তিনি বলেন, আদালত আর শেখ হাসিনার মধ্যে কোন তফাত নেই। শেখ হাসিনার কথার বাইরে কেউ এক পা যেতে পারে না। তিনি আদালতের মাধ্যমে আবার খায়েস পূরণ করলেন। তিনি বলেন, যে দম্পতির বিয়ে হয়েছে স্বাধীনতার পর তার সন্তান নাকি এখন মুক্তিযোদ্ধা! এসব ভুয়া মুক্তিযোদ্ধার চাকরি দিতেই আবারও কোটা বহাল করেছে সরকার। শুধুমাত্র ছাত্রলীগকে চাকরি দিতেই তা করা হয়েছে।
রিজভী বলেন, বাংলাদেশ একটি মুসলিম প্রধান দেশ। এখানে তৃণমূল থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত আলেম ওলামারা নেতৃত্বে রয়েছেন। আলেম ওলামাদের বাদ দিয়ে কোন ইতিহাস রচনা করা যাবে না। কিন্তু এই বর্তমান ডামি নির্বাচনের সরকার আলেম ওলামাদেরও নিপীড়ণ থেকে রেহাই দিচ্ছে না। যাদেরকে এ সরকার সন্দেহ করে তাদের নামে বার বার মামলা দিচ্ছে। মামলা থেকে আলেম ওলামারাও বাদ যায় না। মসজিদের ইমামরাও বাদ যায়নি। বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়ে কেউ মোনাজাত করলে তাকেও গ্রেফতার করা হচ্ছে।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহিদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী বলেন, দেশ ধ্বংসের দারপ্রান্তে, কর্তৃত্ববাদী শাসন শোষণের ফলে দেশ ধ্বংস হয়ে গেছে। দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব আজ হুমকির মুখে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি ডামি ভোটের সরকার করে যাচ্ছে। জাতীয়তাবাদী রাজনৈতিক দলের প্রতিটি নেতাকর্মী ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল দেশবিরোধী চুক্তির বিরুদ্ধে নতুন করে আন্দোলন গড়ে তোলতে হবে। কঠিন কঠোর কর্মসূচির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে ওলামাদলের নেতাকর্মীদের প্রতি আহবান জানান তিনি।
ওলামা দলের আহ্বায়ক মাওলানা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আবুল হোসেনের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম জামাল, সহ ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক এটিএম আবদুল বারী ড্যানী, মাওলানা আলমগীর হোসেন, ক্বারী গোলাম মোস্তফা, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, অধ্যক্ষ মাওলানা নজরুল ইসলাম, মাওলানা মাসুম বিল্লাহ প্রমুখ।