অনলাইন ডেস্ক : ১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে করা ১০টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য গোলামে পরিণত করবে। স্বাধীনতার ৫৩ বছর পর এমন গোলামি চুক্তি মেনে নেয়া যায় না। কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতের এক অংশ থেকে আরেক অংশ পর্যন্ত রেল যোগাযোগ নামে করিডোর প্রদানেব মাধ্যমে আমাদের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে।
তারা বলেন, মুক্তিযুদ্ধে ভারত সহযোগিতা করেছে সেটা ঠিক, কিন্তু একই সঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতা জরুরি ছিল ভারতের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার জন্য।
বৃহস্পতিবার সিলেট মহানগরের কোর্ট পয়েন্টে মধুবন মার্কেটের সামনে ভারতের সাথে সরকারের ১০ সমঝোতা স্বাক্ষরকে দেশবিরোধী আখ্যা দিয়ে জনসাধারণের মাঝে লিফলেট বিতরণকালে জোট নেতারা এসব কথা বলেন।
জোট নেতারা বলেন, ১৯৭২ সালে ভারতের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামী চুক্তির কথা স্মরণ আছে। আজ অবৈধ ক্ষমতা পাকাপোক্ত করার জন্য ৫২ বছর পর শেখ হাসিনা গত ২২ জুন ভারতের সাথে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করছে তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য করদ রাজ্যে পরিণত করবে।
নেতারা বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব অক্ষুণ রাখতে আরেকটি যুদ্ধের মাধ্যমে রক্ত দিয়ে হলেও রেলপথ করিডোরের চুক্তি প্রতিহত করা হবে। ভারতীয় সরকারের সীমাহীন আগ্রাসন, বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে হত্যা রাজনীতিতে অবৈধ হস্তক্ষেপ, শোষণ, সীমান্তে হত্যা, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করার প্রতিবাদে জনগণকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভারতীয় পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান জোট নেতারা।
জোট নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত তাদের ভৌগোলিক সীমানাকে কালচারাল ভারত হিসেবেও বিবেচনা করে, তার পরিধি অনেক বড়। ভারতের মনোভাব এমন যে, ছোট রাষ্ট্র হিসেবে কারও বেঁচে থাকার অধিকার নেই। এমন মনোভাব পোষণ করা একটি দেশের আগ্রাসন থেকে বাঁচতে হলে সব দেশপ্রেমিক নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধভাবে এই ভারতীয় পুতুল সরকারকে প্রতিহত করতে হবে তাদেরকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারতীয় মাস্টারপ্ল্যান এর অংশ হিসেবে বাংলাদেশকে সিকিম বানানোর চক্রান্ত রুখে দিতে হবে। বাংলার লেন্দুপ দর্জি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে।
১২ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতারা আরও বলেন, আমরা ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নই, আমরা ভারতের বন্ধু হতে চাই। কিন্তু যে বন্ধু আমাদের শোষণ করবে, যে বন্ধু আমাদের ফারাক্কা, তিস্তা, টিপাইয়ের ন্যায্য হিস্যা দেয় না, সে কি বন্ধ হতে পারে? কোনোদিনও বন্ধু হতে পারে না। তাই আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করে বলতে চাই, সীমান্ত হত্যা বন্ধ করো, আগ্রাসন নীতি পরিহার করো, বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ বন্ধ করো। কারণ আপনার দেশে গণতন্ত্র থাকবে, আর আমার দেশে গণতন্ত্র যাতে না থাকে সেই ব্যবস্থা করবেন, বাংলার মানুষ তা কোনোদিন গ্রহণ করবে না।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আগ্রাসন মানি না, আমরা সীমান্ত হত্যা মানি না, আমরা ভারতীয় পণ্য বর্জন করব। এই সামাজিক আন্দোলন ঘরে ঘরে পৌঁছে দিতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ এবং জাতীয় স্বার্থ বিরোধী কোন চুক্তি এদেশের জনগণ মেনে নেবে না।
১২ দলীয় মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিমের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণে উপস্থিত ছিলেন জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, জমিয়াতে ওলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, ইসলামী ঐক্য জোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রাকিব, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান শামসুদ্দিন পারভেজ, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম মেম্বার আব্বাস আলী খান, ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম, বাংলাদেশ ইসলামিক পার্টির মহাসচিব আবুল কাশেম, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ এর সিলেট মহানগরের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা আবু বক্কর সরকার, সুনামগঞ্জ জেলার সাধারণ সম্পাদক মৌলানা রশিদ আহমেদ, ছাত্র জমিয়তের সাবেক সভাপতি আদনান আহমেদ, জমিয়ত কেন্দ্রীয় মিডিয়া সেলের সমন্বয়কারী সৈয়দ তালহা আলম, ইসলামী ঐক্য জোটের সিলেট জেলা সভাপতি মুফতি আব্দুল করিম হাক্কানী, ইলিয়াস বিন রিয়াসাত, বাংলাদেশ জাতীয় দলের ভাইস চেয়ারম্যান সারোয়ার আলম সহ জোটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ।